করোনা সক্রিয় রোগীর ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যৌথভাবে প্রয়াস চালিয়েছে। এর ফলে, ভারতে মৃত্যুর হার কমে ১.৫ শতাংশে এসে পৌঁছেছে। কার্যকরী নিয়ন্ত্রণ কৌশল, লাগাতার পরীক্ষা ব্যবস্থা এবং সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বজনীন স্ট্যান্ডার্ড অফ কেয়ার প্রোটোকলের ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা সহ একাধিক কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দেশে মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় দেশে ৪৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিশ্বের মধ্যে ভারতেই মৃত্যু হার সবচেয়ে কম। ২২ মার্চ থেকে দেশে মৃত্যুর হার এখন অনেক কমেছে।
কোভিড সংক্রমণ মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার কেবলমাত্র সংক্রমণ প্রসার রোধেই কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি, যাতে সংক্রমিত রোগীর মৃত্যু হ্রাস পায় তার জন্য কোভিড-১৯-এর চিকিৎসায় একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। স্বল্প গুরুতর রোগীদের গুণমানসম্পন্ন চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সহযোগিতার ফলে সারা দেশে স্বাস্থ্য পরিষেবাকে জোরদার করে তোলা হয়েছে। বর্তমানে এখন ২,২১৮টি হাসপাতালে শুধুমাত্র কোভিড চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আইসিইউ চিকিৎসকদের সক্ষমতা বৃদ্ধি সহ সংক্রমিত রোগীর প্রাণহানি হ্রাসের লক্ষ্যে নতুন দিল্লির এইমস হাসপাতালে ই-আইসিইউ পরিষেবা চালু করা হয়েছে। সপ্তাহে দু’দিন, মঙ্গল ও শুক্রবার টেলি / ভিডিও মাধ্যমে রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করা হচ্ছে। গত ৮ জুলাই এই পরিষেবার সূচনা হয়।
এ পর্যন্ত ২৫টি টেলি-পর্যালোচনা অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩৪টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে ৩৯৩টি প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নেয়।
এছাড়াও, চিকিৎসকদের আইসিইউ / ক্লিনিকাল পরিচালন ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক এবং নতুন দিল্লির এইমস হাসপাতাল গুরুতর রোগীদের চিকিৎসার জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের ওয়েবসাইট – https://www.mohfw.gov.in/pdf/AIIMSeICUsFAQs01SEP.pdf -এ চিকিৎসা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।
এর পাশাপাশি, বেশ কয়েকটি রাজ্য প্রবীণ নাগরিক, গর্ভবতী মহিলা অথবা আগে থেকে অন্যান্য রোগের উপসর্গ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের বিষয়ে সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে, যাতে কোনও কেউ আক্রান্ত হলে তাঁকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত এবং সময়োপযোগী চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া যায় তার জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে আশা-কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে এ বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছেন। এমনকি, কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে সাধারণ মানুষের মধ্যে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এর ফলস্বরূপ, ১৪টি রাজ্য / কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে মৃত্যুর হার ১ শতাংশের নিচে নেমেছে।
গত ২৪ ঘন্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫৯,১০৫ জন। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৫,১৪৮ জন। এই নিয়ে দেশে মোট করোনা থেকে আরোগ্য লাভ করলেন ৭১ লক্ষ ৩৭ হাজার ২২৮ জন। করোনায় আরোগ্যের হার ৯০.২৩ শতাংশ। দেশে এখন সক্রিয় রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ লক্ষ ৫৩ হাজার ৭১৭। ১০টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে নতুন করে আরোগ্য লাভ করেছেন ৭৮ শতাংশ। কর্ণাটকে একদিনে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কেরলে একদিনে ৭ হাজার মানুষ আরোগ্য লাভ করেছেন।
গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৫,১৪৮ জন। ২২ জুলাই থেকে যা সর্বনিম্ন। ১০টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে নতুন করে সংক্রমণের হার ৮২ শতাংশ। কেরল ও মহারাষ্ট্রে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজারেরও বেশি মানুষ। এরপরে রয়েছে কর্ণাটক ও পশ্চিমবঙ্গের স্থান। সেখানে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার মানুষ।
গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে ৪৮০ জনের। এর মধ্যে ৮০ শতাংশই ১০টি রাজ্য / কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে। মহারাষ্ট্রে মৃত্যু হয়েছে ১১২ জনের।